সুজিত গৌড় ( হুগলী ) : স্বাধীনতা সংগ্রামী আজও পর্যন্ত পেলো না কেন্দ্র সরকারের স্বীকৃতি। নর্দমা নোংরা আর্বজনা পরিষ্কার করে চলছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর ছেলের জীবন। ভাঙ্গা টালির বাড়িতে বাস করছে স্ত্রী । শ্রীরামপুর মাহেশের ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় স্বাধীনতা সংগ্রামী আজও পর্যন্ত পেলোনা কেন্দ্র সরকারের স্বীকৃতি অভিযোগ পরিবারের। ভাঙা টালির বাড়িতে অসহায় অবস্থায় দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করছেন স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্ত্রী ঝর্না রায়। দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্ত্রী। বড় ছেলে শ্রীরামপুর পৌরসভার অস্থায়ী কর্মী। নর্দমা পরিষ্কার করার কাজ করেন। সকাল হতেই কোদাল, টানা, নিয়ে মা ঝর্নাদেবীকে সুখে রাখতে সংগ্রাম শুরু হয়। বড় ছেলে পেশায় অটো চালক। নিজের অটো কেনার ক্ষমতা নেই। যখন যার অটো পায় সে চালায়। ১৯২০ সালে বাংলাদেশের ময়মনসিং জেলার মুড়িগান্ধী গ্রামের বিদ্যালয়ের শিক্ষক শচীন্দ্র চন্দ্র রায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার ইতি টেনে আড়ালে স্বাধীনতা সংগ্রামিদের সান্নিধ্যে আসেন তিনি। মেজো মামার ধীরেন রায়ের কাছে স্বদেশী মন্ত্রের দীক্ষিত হয়ে গান্ধী গ্রুপে যোগদান করেন।১৯৪২ সালের শেষের দিকে আইএনএ( ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি) নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের দলের প্রথম সারির নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালের ১৯ মার্চ কলকাতার খিদিরপুর ডকে পৌঁছান। বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী শরৎ বোস, অমিয় বোস, কালিপুর, রতনপুর রোডের এন্টালি কুলবিল্ডিরের ১৯ নম্বর রুমে থাকতে শুরু করেন । এরপর থেকে স্বাধীনতার স্মৃতির লড়াইয়ে কেন্দ্র সরকারের এমন কোন দপ্তর নেই তার অজানা। রাজ্য সরকার স্বীকৃতি দিলেও কেন্দ্রীয় সরকার আজও পর্যন্ত তাকে স্বীকৃতি সম্মান দেয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। তার পরিবারের দাবি বাবাকে নেতাজীর বাহিনির সহ যোদ্ধা হিসাবে সন্মান দেওয়া হোক। এই সন্মানের আশায় প্রহর গুনতে গুনতে ২৭ শে বৈশাখ ২০০৫ সালে তিনি মারা যান। আগামী দিনে সেই সন্মান তিনি পাবে কি মা তাও কারো জানা নেই। এই সন্মান টুকুর আশায় ঝর্ণাদেবী বাড়ির গৃহদেবতার সঙ্গে ক্ষিতীশ বাবুর পুজো করেন। মানুষের দরবার ছেড়ে মন্দিরে মন্দিরে মাথা ঠুকছেন সামান্য সন্মান টুকুর আশায়। দুয়ারে দুয়ারে সরকার পৌঁছালেও স্বাধীনতা সংগ্রামীর ভাঙ্গা বাড়িতে কে আসেন, কেউ বা দেখেন। পরিবারের অভিযোগ, দাবি আমাদের টাকা পয়সা লাগবে না। হাজার কষ্ট শোয়ে নেবো সামান্য সন্মান টুকুর আশায়। নর্দমার নোংরা আর্বজনার কাজ করে দিন কাটছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর ছেলের। কাঠ, খোটো পুড়িয়ে চলছে ঝর্নার দেবীর রান্না। স্বাধীন ভারতের এই চিত্রের বিরুদ্ধে বাম, ডান সকলেই। এই চিত্র ফুটে উঠলো শ্রীরামপুর মাহেশ কলোনীর এক জন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীর বাড়িতে।