নেতাজীর সহকর্মী হয়েও জোটেনি স্বাধীনতা সংগ্ৰামীর স্বীকৃতি : ভাঙা ঘরে বসবাস পরিবারের

22nd January 2021 10:03 am হুগলী
নেতাজীর সহকর্মী হয়েও জোটেনি স্বাধীনতা সংগ্ৰামীর স্বীকৃতি : ভাঙা ঘরে বসবাস পরিবারের


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) :  স্বাধীনতা সংগ্রামী আজও পর্যন্ত পেলো না কেন্দ্র সরকারের স্বীকৃতি। নর্দমা নোংরা আর্বজনা পরিষ্কার করে চলছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর ছেলের জীবন। ভাঙ্গা টালির বাড়িতে বাস করছে স্ত্রী । শ্রীরামপুর মাহেশের ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় স্বাধীনতা সংগ্রামী আজও পর্যন্ত পেলোনা কেন্দ্র সরকারের স্বীকৃতি অভিযোগ পরিবারের। ভাঙা টালির বাড়িতে অসহায় অবস্থায় দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করছেন স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্ত্রী ঝর্না রায়।  দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্ত্রী। বড় ছেলে শ্রীরামপুর পৌরসভার অস্থায়ী কর্মী। নর্দমা পরিষ্কার করার কাজ করেন। সকাল হতেই কোদাল, টানা, নিয়ে মা ঝর্নাদেবীকে সুখে রাখতে সংগ্রাম শুরু হয়। বড় ছেলে পেশায় অটো চালক। নিজের অটো কেনার ক্ষমতা নেই। যখন যার অটো পায় সে চালায়। ১৯২০  সালে বাংলাদেশের ময়মনসিং জেলার মুড়িগান্ধী  গ্রামের বিদ্যালয়ের শিক্ষক শচীন্দ্র চন্দ্র রায়ের  ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার ইতি টেনে আড়ালে স্বাধীনতা সংগ্রামিদের সান্নিধ্যে আসেন তিনি।  মেজো মামার ধীরেন রায়ের কাছে স্বদেশী মন্ত্রের দীক্ষিত হয়ে গান্ধী  গ্রুপে যোগদান করেন।১৯৪২ সালের শেষের দিকে আইএনএ( ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি) নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের দলের প্রথম সারির নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালের ১৯ মার্চ কলকাতার খিদিরপুর ডকে  পৌঁছান। বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী  শরৎ বোস, অমিয় বোস,   কালিপুর, রতনপুর রোডের এন্টালি কুলবিল্ডিরের ১৯ নম্বর রুমে থাকতে শুরু করেন । এরপর থেকে স্বাধীনতার স্মৃতির লড়াইয়ে কেন্দ্র সরকারের এমন কোন দপ্তর নেই তার অজানা। রাজ্য সরকার স্বীকৃতি দিলেও  কেন্দ্রীয় সরকার আজও পর্যন্ত তাকে স্বীকৃতি সম্মান দেয়নি  বলে অভিযোগ পরিবারের। তার পরিবারের দাবি বাবাকে নেতাজীর বাহিনির সহ যোদ্ধা হিসাবে সন্মান দেওয়া হোক। এই সন্মানের আশায় প্রহর গুনতে গুনতে ২৭ শে বৈশাখ ২০০৫ সালে তিনি মারা যান। আগামী দিনে সেই সন্মান তিনি পাবে কি মা তাও কারো জানা নেই।  এই সন্মান টুকুর  আশায় ঝর্ণাদেবী বাড়ির গৃহদেবতার সঙ্গে ক্ষিতীশ বাবুর পুজো করেন। মানুষের দরবার ছেড়ে মন্দিরে মন্দিরে মাথা ঠুকছেন সামান্য সন্মান টুকুর আশায়। দুয়ারে দুয়ারে সরকার পৌঁছালেও স্বাধীনতা সংগ্রামীর ভাঙ্গা বাড়িতে কে আসেন, কেউ বা দেখেন। পরিবারের অভিযোগ, দাবি আমাদের টাকা পয়সা লাগবে না। হাজার কষ্ট শোয়ে নেবো সামান্য সন্মান টুকুর আশায়। নর্দমার নোংরা আর্বজনার কাজ করে দিন কাটছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর ছেলের। কাঠ, খোটো পুড়িয়ে চলছে ঝর্নার দেবীর রান্না। স্বাধীন ভারতের  এই চিত্রের বিরুদ্ধে বাম, ডান সকলেই। এই চিত্র ফুটে উঠলো শ্রীরামপুর মাহেশ কলোনীর এক জন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীর বাড়িতে।





Others News

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) :  নিম্ন চাপের জেরে শনিবার থেকে অকাল বৃষ্টিতে মাথায় হাত চাষীদের।
জেলায় আলু চাষে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে কয়েক লক্ষ টাকার উপর বলে দাবি চাষীদের। ধান জমিতে যেমন ক্ষতির পাশাপাশি হুগলী জেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষতি এবার আলু চাষে। চলতি বছরে বার বার নিম্নচাপ  চাপের জেরে যেভাবে ধান চাষ পিছিয়ে ছিল ঠিক আলু চাষও পিছিয়ে ছিল প্রায় পনোর দিন। তবে গত শুক্রবার পযন্ত হুগলী জেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে বসানো হয়ে গিয়েছিল আলু এবং ৬০ শতাংশ জমি আলু চাষ উপযোগী করে তুলে ছিলেন চাষীরা। ধান চাষের মত আলু চাষের শুরুতে এবার কাল হয়ে উঠলো অকাল বৃষ্টি। অকাল বৃষ্টির ফলে যে সব জমিতে ইতি মধ্যেই আলু বসানো হয়ে গিয়েছিল, সেই সব জমিতে জল জমে থৈ থৈ করছে। ফলে জমিতে বসানো সমস্ত আলু বীজ পচে নষ্ট হতে বসেছে।  কারণ আলু বসানোর পর অন্তত পনেরো থেকে কুড়ি দিন কোনো জলের প্রয়োজন পরে না আলু চাষের ক্ষত্রে।
এ বছর এক বিঘা জমিতে চাষ উপযোগী করে আলু বসানো পযন্ত চাষীদের খরচ পড়েছে প্রায় পনেরো হাজার টাকা অন্যদিকে আলু বসানোর আগে পর্যন্ত  এক বিঘা জমিকে  চাষ উপযোগী করে তুলতে খরচ পড়েছে প্রায় সাত হাজার টাকা। অর্থাৎ ইতি মধ্যে নিম্ন চাপের জেরে অকাল বর্ষণে হুগলী জেলার ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে লক্ষ  লক্ষ টাকার উপর। জেলায় আলু চাষের জমির পরিমান ৯০ হাজার হেক্টর জমি। সেমবার সকাল থেকেই  আলু জমি থেকে জল বের করে আলু বীজ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন চাষীরা। চাষীদের দাবি অকাল বর্ষণে একেবারে সর্বস্বান্ত  হয়ে পড়েছে। আবার নতুন করে আলু বসানো বা জমি তৈরি করে আবার আলু বসানো অনেকের পক্ষেই আর সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে আবহাওয়া উপযোগী হলে পুনরায় জমি আলু চাষের উপযোগী করে আলু বসাতে সময় লাগতে পারে পনেরো থেকে কুড়ি দিন। ফলে আলু চাষে ফলন যেমন কমবে খাবার আলুর জোগানেও পড়বে টান। আগামী দিনে ধানের ক্ষতির ফলে যেমন  চালের যোগান টান পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।  ঠিক তেমনি আগামী দিনে খাবার আলুর জোগানেও টান পড়বে বলে মত চাষীদের।